উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি: গণমাধ্যমের ভূমিকা

লেখাটি শেয়ার করুন

লেখাটিতে যা থাকছে

স্বপ্নের শুরু ও বিস্তর

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহারকে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে । যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষ ভূগোল আর সময়ের সীমাকে অতিক্রম করে পরস্পরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারছে অভাবনীয় দ্রুততম সময়ে। সামাজিক যোগাযোগ যেমন বাড়ছে মানুষে মানুষে, তেমনি বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্রমশ।

সাধারন জনগন বিভিন্ন ব্লগ, সামাজিক যোগাযোগের সাইটসমূহে সরকারের নীতি, কার্যক্রম সমূহ সম্পর্কে যেমন নিজেদের মন্তব্য ও পরামর্শ দিয়ে সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বিষয়গুলোকে আলোতে তুলে আনছেন, তেমনি বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই মোবাইল ফোনের ব্যবসার মাধ্যমে হাজার হাজার তরুণ নিজেদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছেন।

তেমনি মোবাইল ফোনের ব্যবসা গ্রামীন মহিলাদের অর্থনৈতিক মুক্তি ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে অল্প করে হলেও সাহায্য করছে ।  শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের জ্ঞান ও কর্মদক্ষতা  উন্নয়ন ঘটাচ্ছেন ।

নব্বই’এর দশক থেকে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও উন্নয়ন কর্মকান্ডে তথ্য প্রযুক্তির    ব্যবহার নিয়ে স্বপ্ন দেখার শুরু হয় । এরপর বিভিন্ন সময়ে শিক্ষা, কৃষি,     স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র দূরীকরন,  ব্যবসাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নয়ন তরান্বিত করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে  বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়।

বর্তমান সরকার তথ্য প্রযুক্তি সমৃদ্ধ দ্রারিদ্রতা মুক্ত দেশ গড়ার জন্য ২০২১ সালের মধ্যে সাধারন মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, ব্যবসা ও পরিবেশের উন্নয়ন, পিরবার প্রতি অন্তত একজনের কর্মসংস্থান ঘটিয়ে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত করে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রুপান্তর করার জন্য রুপকল্প ২০২১ ঘোষণা করেছেন। এজন্য সরকার জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা-২০০৯    গ্রহন করেছে । দেশকে একটি তথ্য প্রযুক্তি সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সরকারী ভাবে ইতিমধ্যে নানা ধরনের পদক্ষেপ    গ্রহন করা হয়েছে ।

দেশের সব জেলার ওয়েবসাইট তৈরি, বিশ্ববিদ্যালয় আর কলেজ গুলোতে অনলাইনে ভর্তির ব্যবস্থা, বিদ্যুত গ্যাসের বিল মোবাইলে দেয়ার সুযোগ, কম সময়ে ডাক বিভাগে মোবাইলের মাধ্যমে দেশব্যাপি টাকা আদান প্রদান ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট ওয়াইফাই চালু করা হয়েছে । দেশের ৮০০ হেলথ সেন্টারে ইন্টারনেট ও মোবাইল সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। ফরিদপুরসহ একাধিক স্থানে টেলিমেডিসিন সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে। দেশে বর্তমানে কিছু মোবাইল স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। জনসাধারণ টেলিফোনে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। কৃষকদের কাছে কৃষি তথ্য সেবা পৌছে দেওয়ার জন্য গ্রাম পর্যায়ে কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

ইউএনডিপি’র অর্থায়ানে অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রাম তথা এটুআই প্রজেক্ট চালু করেছে    সরকার । এরই অংশ হিসেবে দেশের সাংবাদিকদেরকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়ে সংবাদ তৈরি ও প্রচার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রশিক্ষন ও সচেতনতা সরবরাহের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট ।

এরকম অজস্র পদক্ষেপের মতো বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ও  নারীর উন্নতি ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে সম্পৃক্ত করেছে । শিক্ষিত নারীদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষা সরবরাহ করে তাদের ক্ষুদ্র উদ্যেক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার তাগিদে জাতীয় মহিলা সংস্থার প্রকল্প ‘জেলাভিত্তিক মহিলা কম্পিউটার প্রশিক্ষন’ প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষিতি নারীকে প্রশিক্ষনের  ব্যবস্থা করেছে ।

সরকারের এই সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি বেসরকারী পর্যায়েও তথ্য প্রযুক্তি খাতে দারিদ্র দূরিকরন, নারী ও প্রান্তিক মানুষের সংশ্লিষ্ঠতা ও অংশগ্রহন বাড়ানোর জন্য, সর্বোপরি দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড এগিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে । গ্রামীন নারীদের কাছে  তথ্য সেবা সরবরাহের জন্য ডেভেলপমেন্ট রিসার্স নেটওয়ার্ক (ডিনেট) এর ইনফো-লেডি তথা তথ্য কল্যানী প্রকল্প ব্যাপক    সাড়া ফেলেছে । এ প্রকল্পে কিছু নারী যেমন তথ্য সংশ্লিষ্ঠ কাজের মাধ্যমে নিজেদের উন্নয়ন, স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করছেন, তেমনি গ্রামের অবহেলিত জনপদের নারীদেরকে প্রয়োজনীয় তথ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ সেবা সরবরাহ করছে ।

এভাবে শ্রেনী নির্বিশেষে  সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর জন্য নানা ধরনের জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততামূলক প্রকল্প হাতে নিচ্ছে । যার ফলে    গ্রামীন এলাকায় প্রযুক্তির অনুপবেশ ঘটছে । আমাদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক আর মনস্তাত্ত্বিক বিষয়সমূহের নব্য প্রযুক্তি সমূহের মেলবন্ধন ঘটছে । বাড়ছে প্রযুক্তির ব্যাবহার, বেড়ে চলেছে সম্ভাবনা ।

সম্ভাবনায় ভরপুর একটি জ্ঞান ভিত্তিক পৃথিবী গড়ার পথে দাঁড়িয়ে আমরা উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারকে লোকপরিসরে কিভাবে আরো বাড়ানো পারি, এক্ষেত্রে গণমাধ্যম কি ভূমিকা পালন করতে পারে, সে ব্যাপারে দেখার চেষ্টা করবো । পাশাপাশি এক্ষেত্রে গণমাধ্যমের যে সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাবনার জায়গাগুলো আছে, সেগুলো খোঁজার চেষ্টাও  থাকবে সাধ্যমতো । 

গণমাধ্যম ও তথ্যপ্রযুক্তি: সেতুর সন্ধানে

 সংবাদপত্র, রেডিও ও টেলিভিশন সাধারন জনগনের মধ্যে বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও    শক্তিশালী মাধ্যম । প্রতিদিন সারাবিশ্বে যা কিছু ঘটে, সংবাদপত্রে পাতায় চোখ  বুলিয়েই জেনে যাই আমরা। ঘন্টায় ঘন্টায় টেলিভিশনে চোখ রেখে, রেডিওতে কান পেতে জেনে যাই সর্বশেষ ঘটমান সংবাদটি ।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও গত দু’দশক ধরে সংবাদপত্র ও টেলিভিশন শিল্পে দেখা গেছে অভাবনীয় বিকাশ । যাকে মিডিয়া বুম বলে চিহ্নিত করেছেন মিডিয়া বোদ্ধারা । গত কয়েক বছরে দেশে বেড়েছে সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেলের সংখ্যা, সাথে সাথে বেড়েছে এর নান্দনিক ও প্রাযুক্তিক মান। আর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এ বিকাশের পেছনে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেছে । প্রযুক্তিক উৎকর্ষতা আর সহজলভ্যতা মিডিয়া প্রতিষ্ঠানে দিয়েছে গতি, স্ংবাদিকতা শিল্প পেয়েছে তাৎক্ষনিকতা । পাঠককে বিভিন্ন ইস্যূতে তথ্য সরবরাহ করে যেমন তাকে শিক্ষিত করে তুলবার কাজটা মিডিয়া করে থাকে, তেমনি তাকে বিনোদিত, প্রভাবিত করার কাজটাও করে । এছাড়া বিভিন্ন নতুন ইস্যূতে জনগনকে সচেতন করার কাজটাও এই মিডিয়ারই। এজন্য জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ বিনির্মানে মিডিয়াকে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রেডিও, টেলিভিশন আর সংবাদপত্র ব্যবহার করে সাধারন জনগন তথ্যসমৃদ্ধ হয়ে উঠতে পারে, যা তাদের ব্যক্তিগত জীবনে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে সহায়তা করে ।

উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার গোটা পৃথিবী জুড়েই আজ  মনোযোগ    আকর্ষন করেছে । কাঙ্খিত জ্ঞান ও তথ্য ভিত্তিক সমাজের জন্য, প্রতিটি নাগরিককে তথ্য সমৃদ্ধ মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রত্যাশায়, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত পৃথিবীর জন্য সাধারন মানুষের হাতে তথ্যপ্রযুক্তি তুলে দিয়ে তাদের ক্ষমতায়ণ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এর ভূমিকা আজ সর্বজনবিদীত ।

প্রতিষ্ঠিত সংবাদ উৎপাদনকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান  নিজে যেমন তথ্য সরবরাহ করে জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ বিনির্মানে ভূমিকা রেখে চলছে। পাশাপাশি বর্তমানে মোবাইল, কম্পিউটার ব্যবহার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে মিডিয়ার পাঠক-দর্শক নিজেও ভার্চুয়াল পরিসরে নিজস্ব তথ্য, অভিমত সরবরাহের সুযোগ পেয়েছে । ইন্টারনেটের কল্যানে নিজের অভাব, অভিযোগ, দাবি চারপাশের মানুষকে জানানোর জন্য, ব্যাক্তিগত মিডিয়া যেমন ব্লগ, ওয়েবসাইট নির্মান করে নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে  এগিয়ে নেয়ার সুযোগ তৈরি করে  দিয়েছে এই নব্য তথ্য ও   যোগাযোগ প্রযুক্তি । কেবল মিডিয়ার  ভোক্তা হিসেবেই এতোদিন যাদের পরিচয় আটকে ছিলো, তাদের এখন চালকের আসনে বসার পরিসর তৈরি হচ্ছে । দীর্ঘকাল ধরে অডিয়েন্সের প্রচলিত যে ধারনা, সেটা পাল্টে যাচ্ছে নতুন তথ্য প্রযুক্তির কল্যানে । কোনো সংবাদপত্রের পাঠকের-ই হয়তো একটি নিজস্ব ব্লগ বা ওয়েব সাইট আছে, যেখানে সে তার প্রতিক্রির অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত কোন সংবাদ সম্পর্কে তার সুঘবদ্ধ সমালোচনা লিপিবদ্ধ করে ব্যাক্তিগত পাঠককূলের জন্য ।

আর সমাজে ক্রিয়াশীল এ প্রবনতাগুলো ক্রমশই একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজের দিকে অগ্রযাত্রার উৎসমুখ উল্লেখ করে ।  এর পাশাপাশি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার বাড়িয়ে সাধারন মানুষকে নিজের ও সামগ্রিক অর্থে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সংশ্লিষ্ঠ করার যে সুযোগ, সেটাকে বিকশিত করা দরকার সময়ের প্রয়োজনেই । সাধারন মানুষকে জানাতে হবে তার কেনা মোবাইল ফোনটি দিয়ে সে কিভাবে দরকারি মেইলটি করতে পারে, গ্রামের কমিউনিটি ইনফরমমেশন সেন্টারে বসে স্বাস্থ্য বা কৃষি সংক্রান্ত তথ্যটি কিভাবে সে খুঁজে বের করতে পারে । মোবাইলের মাধ্যমে কিভাবে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা বা টাকা লেনদেনের জন্য খুব সহজ, কম সময়ে ডাক বিভাগের নতুন মোবাইল সেবাটি পাওয়া যায়, সে ব্যাপারে সাধারন জনগনকে সচেতন ও উৎসাহিত করতে হবে । আর তাহলে তথ্য প্রযুক্তির কল্যানে পাওয়া নাগরিক সুবিধাগুলোর যথাযোগ্য ব্যবহার বাড়বে,  বাড়বে সাধারন মানুষের ভেতর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের ঝোঁক ও সংশ্লিষ্ঠ জ্ঞান ।

উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির এ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্যে, লোক অবহিত করনের তাগিদে এ কাজটা করতে পারে সংবাদ প্রতিষ্ঠানগুলো । তথ্য  ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ঠ জ্ঞান ও সাধারন জনগনের মধ্যে দেশের সংবাদপত্র, টেলিভিশন চ্যানেলসমূহ  এক্ষেত্রে সেতুর ভূমিকা পালন করতে পারে । যা দেশের তথ্য প্রযুক্তির ব্যাবহার, এর অভিজ্ঞম্যতা, এ সংক্রান্ত লোকজ্ঞান বৃদ্ধি করবে ।

আমাদের বাস্তবতা

মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের ক্রমশ বিজ্ঞাপন নির্ভরতা আর শহর কেন্দ্রিকতা, কনটেন্টে কেবল বিনোদন, রাজনীতি আর বানিজ্যের পসার বিশ্বজুড়েই সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলোকে আড়াল করে রেখেছে । যেমন মিডিয়াতে আড়াল হয়ে যায় প্রান্তিক চাষি, তার লড়াই । সাধারন মানুষের প্রতিদিনকার যাপিত জীবনের হাজারো অনুসঙ্গ । গণমাধ্যম বলে যাকে ডাকা হয়ে আসছে শুরুর সময় থেকে, সেটা গণ চরিত্র কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না । হয়ে উঠে বিজ্ঞাপনের বাজার, রাজনীতিবিদদের চেহারা আর কাজকর্ম দেখার সৌখিন জানালা । আর এ প্রেক্ষিতেই বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমগুলো তথ প্রযুক্তি সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের মোড়কে বেশিরভাগক্ষেত্রেই প্রযুক্তি পন্যের বিজ্ঞাপন দিয়েই দায় শেষ করে ।

গ্লোবাল নলেজ পার্টনারশিপ এর নির্বাহী প্রধান রিনালাই আবদুল রহিম , The Media and the information society নামক বইতে এ ব্যাপারে বলেন, There is as yet very little reporting on ICTs and their long-term potential and consequences in the traditional media. Yes, superficial news on the launch of an updated version of some hot technology will make the pages of newspapers, but in depth, analytical and thought-provoking pieces on the impact of ICTs on development do not often appear. As a purveyor of information and change, the mass media has a duty to shine the spotlight on this potent tool and agent for global change (Rahim, 2004).

বাংলাদেশের সংবাদপত্রসমূহেও একই রকম চিত্র দেখা যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে । তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংক্রান্ত রির্পোট বলতে কেবল নতুন বাজারে আসা উত্তেজক পন্য সমূহের বিবরনে ঠাসা সংবাদই চোখে পড়ে । নতুন ব্রান্ডের কোন মোবাইল এলো, নতুন কোন ভিডিও গেমস এসেছে বাজারে, প্রযুক্তি সংক্রান্ত সংবাদ যেন এগুলোই। কিন্তু গুগল সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী কিভাবে তার শিক্ষা সংক্রান্ত ই-তথ্য সমূহ সংগ্রহ করতে পারে বা ওপেন একসেস জার্নাল ব্যবহার করে কিভাবে বৈশ্বিক জ্ঞান ও গবেষণা সংক্রান্ত গবেষণা সম্পর্কে জানা যেতে পারে, সে ব্যাপারে কোনো দিক নির্দেশনা চোখে পড়ে না সংবাদপত্রের পাতায় । অথচ বিজ্ঞাপনের জন্য ছেড়ে দেয়া হয় পুরো    পত্রিকার অনেকটা জায়গা । এমনকি যদি সম্ভব হতো,  বিনোদন নিয়ে সপ্তাহে কয়েক কিস্তি ছাপা গেলে পত্রিকা কর্তৃপক্ষ পিছপা হতো না ।

তবে বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তি সংক্রান্ত কিছু সাময়িকী দেখা যায়, যাদের মধ্যে কম্পিউটার জগত, কম্পিউটার বার্তা অন্যতম। এগুলো মূল্যের দিক থেকে এতো চড়া যে, গ্রামের কোনো সাধারন মানুষ তথ্য সংক্রান্ত জ্ঞান আহরনের জন্য বোধকরি  এটা কিনতে চাইবেন না । সাময়িকী কর্তৃপক্ষেরও টার্গেট অডিয়েন্স সম্ভবত এই জনগোষ্ঠি না , যারা মোবাইলকে শুধু কথা বলার যন্ত্র বলেই জানে, কম্পিউটারকে টেলিভিশনের মতো দেখতে একটা দূর্বোধ্য যন্ত্রই দৃশ্যত মনে হয় । অথচ এরা এসব প্রযুক্তির ব্যবহার জানেন না । এসব প্রযুক্তিকে উন্নয়ন সংশ্লিষ্ঠ কাজে ব্যবহার করার জ্ঞান আহরন বা উৎসাহ তো অনেক দূরের ব্যাপার । অথচ দেশের টোটাল  ক্ষমতা ও জ্ঞান কাঠামো থেকে নাই হয়ে যাওয়া এসব মানুষের হাতেই রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ।

সংবাদপত্র বা একজন সংবাদকর্মী  গ্রামীন জনগনের কাছে টেলিমেডিসিন সম্পর্কে ধারনা দেয়ার জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন ।  তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে কিভাবে জীবনমান উন্নত করা যায়, কিভাবে ইন্টারনেট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্যটি খুঁজে তাকে ব্যবহার করা যায়, সে ব্যাপারে তার পাঠককে জানাতে পারে ।

গণমাধ্যম যা করতে পারে

উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার বাড়ানো করার কাজটাকে এজেন্ডা হিসেবে গণ্য করা

উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভূমিকা সর্বত গ্রহনযোগ্য একটি ধারনা । কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি নিজে নিজে তো আর উন্নয়ন ঘটাতে পারবে না । উন্নয়নের জন্য দরকার জনসংশ্লিষ্ঠতা । তথ্য প্রযুক্তির সাথে জনগনের সামাজিক, সাংস্কৃতিক আর অর্থনৈতিক বাস্তবতার মেলবন্ধন ও সামাজিকায়ন ঘটানো । আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করতে পারে দেশের রেডিও, সংবাদপত্র আর টেলিভিশন চ্যানেলগুলো ।

দেশকে আক্ষরিক অর্থেই ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে তৈরি করার জন্য গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানসমূহ তথ্য ও যোগাযোগ সংশ্লিষ্ঠ বিষয়সমূহ এর সাথে জড়িত উন্নয়নের ধারনা ও সমাজে বিদ্যমান প্রবনতা গুলোকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে একে এজেন্ডা হিসেবে গ্রহন করতে পারে । প্রযুক্তি পাতায় নতুন পন্যের বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি এ বিষয়সমূহকে তুলে আনতে হবে । পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ঠ সংবাদগুলো কেবল পাতানির্ভর না করে এ বিষয়গুলোকে বিশেষ ট্রিটমেন্ট দিতে হবে।

 পাঠককে শিক্ষিত করে তোলা

পাঠককে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষিত করে তুলবার কাজটা, তাকে নতুন নতুন ইস্যূতে ওয়াকিবহাল করার চেষ্টাটা গণমাধ্যম তার প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই করে আসছে । বাংলাদেশে বর্তমানে ৭০ লাখের মতো কমপিউটার ব্যবহারকারী রয়েছে। প্রায় ৫ লাখের মতো মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।

Flat lay composition with equipment for journalist on grey table

উন্নয়নশীল বিশ্বে ভীনদেশি প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ভীতি যেমনটা থাকে, তেমনি এগুলো ব্যাবহারের পরিসরও থাকে খুব সামান্য, যেটা প্রযুক্তির কার্যকর ও পরিপূর্ণ ব্যবহারকে নিশ্চিত করে না ।    ফলে এর সাথে সংশ্লিষ্ঠ উন্নয়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ হয় । প্রযুক্তি ভীতি, অজ্ঞতা ও নব্য প্রযুক্তি সমূহের সাথে আমাদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মনস্তাত্বিক দূরুত্ব সমূহ কমিয়ে আনার কাজটা প্রাথমিক ভাবে গণমাধ্যমসমূহকেই করতে হবে । কেবল টাইপ রাইটিং আর ইন্টারনেট ব্রাউজ করাই নয়,  কম্পিউটারকে কিভাবে ব্যবসা থেকে শুরু করে শিক্ষা গবেষণা উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা যায়, সে ব্যাপারে পাঠককে প্রাথমিক ধারনা ও উৎসাহ দেয়ার দায়িত্ব সংবাদকর্মীকেই নিতে হবে । মোবাইল আর ইন্টারনেট দিয়ে কিভাবে তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষন ও তথ্য তৈরির কাজটা খুব সহজে করা যায়, সেটাও ফিচার আকারে পাঠকের সামনে উপস্থাপন করতে হবে । অথবা সরকারের হেলথ সার্ভিস বা কৃষি সার্ভিস ব্যবহারের ক্ষেত্রে কি বিষয়গুলো শিখতে হবে, সে ব্যাপারটাও পাঠকের সামনে তুলে ধরতে পারে গণমাধ্যম ।

তথ্য প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ঠ গণসচেতনতা বৃদ্ধি করা

উন্নয়নে কিভাবে তথ্য প্রযুক্তি ভূমিকা পালন করে, সে ব্যাপারে পাঠককে বিস্তারিত জানাতে হবে । তার হাতের ছোট্ট মোবাইলটি দিয়ে সে যে তার কৃষিকাজ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি জানতে পারেন, মোবাইলের মাধ্যমে সরকার কর্তৃক দেয়া বিভিন্ন প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ঠ নািেগরক সেবা ভোগ করতে পারেন, এ ব্যাপারে তাকে জানাতে ও উৎসাহিত করতে হবে।

এক্ষেত্রে সংবাদপত্রে সচেতনতা ও শিক্ষন বিষয়ক সংবাদ, ফিচার প্রকাশ করা যেতে পারে।  টেলিভিশনে সচেতনতা মূলক প্রতিবেদন, ডকুমেন্টারি, বিজ্ঞাপন, নাটক, এনিমেশন মুভি প্রচার করা যেতে পারে ।

প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ঠতা বৃদ্ধি

গ্রামীন দরিদ্র জনগোষ্ঠির তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে দূরৃত্ব অনুভব করে অনেকক্ষেত্রে । এজন্য পত্রিকাগোষ্ঠি বা টেলিভিশন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ যদি বেশি বেশি সংবাদ, ফিচার, নির্দেশনামূলক অনুষ্ঠান ও তথ্যভিত্তিক বিজ্ঞাপন প্রচার করে, তবে পাঠক-দর্শক-শ্রোতা এগুলোর সাথে নিজের সম্পর্ক ও সংশ্লিষ্ঠতা অনুভব করবে । এ বিষয়টি সাধারন জনগনের নতুন প্রযুক্তি গ্রহন ও তার কার্যকরী উন্নয়নসংশ্লিষ্ঠ ব্যবহারের জন্য প্রভাবিত ও উৎসাহিত করবে । 

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ঠ লিটারেসি বৃদ্ধি

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি থাকলেই হবে না, এর যথার্থ ব্যবহার জানাটাই  অধিক গুরুত্বপূর্ণ । বাংলাদেশে মোবাইল প্রযুক্তির ব্যাপক বিস্তার হলেও কেবল কথা বলা ছাড়া এ প্রযুক্তির অন্যান্য ব্যবহার আমাদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অধরা থেকে গেছে । এক্ষেত্রে মোবাইলে ই-কনটেন্ট দেখা ও আপলোড, সংবাদপত্র; ই-বুক পাঠ প্রভৃতির ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের কিছু অসংগঠিত আচরন লক্ষ্য করা গেলেও প্রান্তিক পর্যায়ে এ ধারনা ও প্রবনতাগুলো এখনো তেমন পরিলক্ষিত হয় না ।

আমাদের তথ্য সংগ্রহ ও তার প্রতি সাড়া প্রদানের ক্ষেত্রে স্বাক্ষরতা কম থাকা সহ প্রযুক্তি বিষয় সাংস্কৃতিক ও মনস্তাত্বিক দূরত্ব এ বিষয়গুলোর পেছনে কার্যকর ভূমিকা পালন করে । আর এসব কারনেই আক্ষরিক অর্থেই সত্যিকারের গণমাধ্যম হিসেবে প্রযুক্তি ও যোগাযোগবিদদের কাছে স্বীকৃত ইন্টারনেট ব্যবহারের সবটুকু সুফল আমরা ঘরে তুলতে পারছি না । আর এ কারনে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার কাছটি চূড়ান্ত ভাবে সফল হয়ে উঠছে না ।

এক্ষেত্রে গণমাধ্যম তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যাবহারের বিভিন্ন পথ ও পন্থা পাঠকের সামনে হাজির করতে পারে । পাঠক-দর্শক-শ্রোতার স্বাক্ষরতা বৃদ্ধির জন্য নির্দেশনামূলক নানা প্রতিবেদন, ফিচার ও অুনষ্ঠান প্রচার করতে   পারে ।

সংশ্লিষ্ঠ জ্ঞান ও ধারনার বিস্তার ও সামাজিকায়ন

কৃষক তার উন্নয়নের জন্য, কৃষি সংক্রান্ত তথ্যের জন্য ব্যবহৃত মোবাইলটি দিয়ে কিভাবে তথ্য সাহায্য পেতে পারে বা একজন উঠতি কিশোরী তার স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্যের জন্য ঘরে থাকা ডেক্সটপ কম্পিউটারে কিভাবে ইন্টারনেট সংযোগ নিতে পারে, প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো কিভাবে খুঁজে পেতে পারে সে ব্যাপারে ভালো সাহায্যটি করতে পারে প্রযুক্তি সংক্রান্ত একটি ভালো প্রতিবেদন । গোষ্ঠি বা সামাজিক উন্নয়নে প্রযুক্তি কিভাবে ব্যবহার করা যায়, এ ব্যাপারে সংবাদপত্র তার পাঠকের জ্ঞান বৃদ্ধি করার  জন্য কাজ করতে পারে ।

উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহারকে নিশ্চিত করার জন্য এর সামাজিকায়ন জরুরি । সেক্ষেত্রে এ সম্পর্কে লোক অবহিতকরন ও জন পরিসরে উন্নয়নে এর ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য গণমাধ্যমই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে পারে। পাঠকের মনোজগতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে ইতিবাচক ও উন্নয়ন ঘনিষ্ঠ ধারনার  বিকাশ ঘটিয়ে জনগনের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, মনস্তাত্বিক ও অবধারনগত বিষয়ের সাথে প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটিয়ে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে সহায়তা করতে পারে ।

উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির সফল বৈশ্বিক ঘটনাসমূহকে উপস্থাপন

উন্নয়নশীল বিশ্বে প্রতিনিয়ত তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে দারুন সব অগ্রগতির ঘটনা ঘটে চলছে । বিশ্বের প্রতিটি অংশকে জ্ঞানভিত্তিক সমাজের দিকে এগিয়ে নেয়ার প্রয়াশে ব্যাপক মাত্রায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যাবহার কে উৎসাহিত করা হচ্ছে । দক্ষিন আফ্রিকার যে কৃষক কৃষি কাজে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার করে বর্ধিত ফসল উৎপাদনে সমর্থ হয়েছে, তার সাফল্যের গল্পটি বাংলাদেশের কোনো সংবাদপত্রের পাঠককে উদীপ্ত করতে পারে । কৃষি ক্ষেত্রে দেশজ প্রকৌশলের সাথে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ঘটিয়ে অধিক ফসল উৎপাদন সমর্থ হতে পারে এখানকার কেউ ।

সংবাদপত্র তথ্য প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ঠ বৈশ্বিক সাফল্যের ঘটনাগুলো পাঠকের মতো করে প্রতিবেদন, ফিচার, অনুষ্ঠানমালা সাজাতে পারে । এ সংক্রান্ত সংবাদগুলো পাঠকের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের প্রবণতা বাড়াবে । পাঠককে উৎসাহিত করবে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে ।

সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহের কার্যক্রম সম্পর্কে নজরদারি ও ফলোআপ করা

দৈশিক পর্যায়ে উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি, উন্নয়নে এসবের ভূমিকাকে নিশ্চিত করার মাধ্যমে একটি তথ্য সমৃদ্ধ দেশ নিমার্নের জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নানা ধরনের উদ্যেগ নেয়া হচ্ছে ।

সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে স্পর্শ করার লক্ষ্যে যে সব কার্যক্রম গ্রহন করেছে, সে সবের অগ্রগতি, সমালোচনা, ফলোআপ প্রভৃতি সম্পর্কে প্রতিবেদন তৈরি করা যেতে পারে ।

পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তি খাতে যে অবকাঠামো ও প্রযুক্তির বিকাশ ঘটানো দরকার, সে ব্যপারে সরকার ও নীতি নির্ধারনী কর্তৃপক্ষের মনোযোগ আকর্ষনের জন্য সংবাদ তৈরি করার মাধ্যমে মিডিয়া প্রতিষ্ঠান দেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিকাশের দরকারি পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করতে পারে ।

এছাড়া বেসরকারি এনজিও সমূহের বিভিন্ন উদ্যেগ, কার্যক্রমের জবাদিহীতা, ফলোআপ প্রভৃতি বিষয়গুলো নিয়ে সংবাদ প্রতিবেদন তৈরি করে সংবাদ প্রতিষ্ঠান তথ্য প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ঠ কার্যক্রমগুলোর   ব্যাপারে পাঠককে জানাতে পারে । এসব প্রকল্পে জনগনের অংশগ্রহন, মিথষ্ক্রিয়া ও উৎসাহ বৃদ্ধির   জন্যে মিডিয়ার ভূমিকা অনস্বীকার্য ।

গণমাধ্যমের সীমাবদ্ধতা

উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যবহারের জন্য, জনগনের মধ্যে এর ব্যবহার ও কার্যকারিতার নিশ্চিতের জন্য , জনগনকে সচেতন করার কাজে গণমাধ্যম নানা ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে । কিন্তু কিছু সীমাবদ্ধতার কারনে এই জরুরি ভূমিকাটা গ্রহনের ক্ষেত্রে  গণমাধ্যমকে অনগ্রসর দেখা যায় । এক্ষেত্রে যে সব বিষয়গুলোকে কারন হিসেবে চিহ্নিত করা যায়, তাদের মধ্যে নিচের বিষয়গুলো বিবেচনা করা যেতে পারে :

গণমাধ্যমের বানিজ্যমুখিনতা

বিজ্ঞাপন আর বিজ্ঞাপন। পন্যের বিজ্ঞাপন । আদর্শের বিজ্ঞাপন । রাজনীতির বিজ্ঞাপন । গোটা পৃষ্ঠার অনেকটা যেন হরেক রকম বিজ্ঞাপনে ঠাসা । সাথে পশ্চিমা বিদ্যায়তনিক পরিসরের সেখানো সংবাদের গণিত, রসায়ন আর প্রচলিত সংগার ঘোরটোপে পড়ে আমাদের সাংবাদিকতা যেন রাজনীতি আর রাজধানী কেন্দ্রিকতারই অপর পিঠ হয়ে গেছে। বর্তমানে যেখানে প্লরালিস্টিক মিডিয়ার কথা বলা হচ্ছে, যেখানে সমস্ত ভিন্ন ভিন্ন অংশের উপস্থিতি থাকবে, ভিন্ন মত, প্রান্তিক গোষ্ঠিসমূহের সরব উপস্থিতি সমতাভিত্তিতে বিরাজ করবে, সেখানে আমাদের বানিজ্যমুখিনতা প্রবল ।

দীর্ঘসময় ধরে বিকশিত এসব আদর্শ ও ভাবনা আমাদের মিডিয়া ইন্ড্রাষ্ট্রি, দেশজ সাংবাদিকতার ব্যকরনকে যেমন প্রভাবিত করেছে, তেমনি প্রভাব ফেলছে সাংবাদিকদের কনটেন্ট নির্মান, নির্বাচন, সংবাদ জ্ঞান প্রভৃতি  মনস্তাত্বিক বিষয়সমূহকে ।

আর এ কারনেই পত্রিকার প্রযুক্তি পাতায় সংবাদ মানেই সবচেয়ে দামি আর নতুন ল্যাপটপটার বিজ্ঞাপন । ল্যাপটপ মেলার খোঁজখবর । প্রান্তিক মানুষটার খোজ নিয়ে পত্রিকাগোষ্ঠির লাভ নেই । কেননা বিজ্ঞাপনদাতাগোষ্ঠি বিজ্ঞাপন প্রদানের ক্ষেত্রে দরিদ্র মানুষটাকে বিবেচনা করে না। তাই তাকে পত্রিকারও দরকার নেই । আমাদের মিডিয়াকে যে তার পাঠক বেঁচে খেতে হয় !

গণমাধ্যমের এই বাজারমুখিন প্রবনতা ও বিজ্ঞাপন নির্ভরতা প্রযুক্তি পাতাকে উন্নয়ন সংশ্লিষ্ঠ তথ্য প্রযুক্তি সাংবাদিকতার ক্ষেত্র না করে প্রযুক্তি পন্য প্রচারনার হাট করে তুলেছে ।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না থাকা

গণমাধ্যম কর্মীরা উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির সূদুরপ্রসারী প্রভাব ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সম্পর্কে  ওয়াকিবহাল নয় । উন্নয়ন প্রেক্ষিতে গত দু দশক ধরে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক যে নতুন জ্ঞান ধারনার বিকাশ ঘটেছে, পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে এর যে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা এবং আমাদের মতো দরিদ্র দেশে এর ব্যাবহার যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটাতে পারে , সে ব্যাপারে সম্ভব্য গন্তব্য জানা না থাকার কারনেরই দেশে তথ্য প্রযুক্তি সাংবাদিকতা বিকাশ লাভ করছে না । সংবাদকর্মীরা তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে সংবাদ নির্মানে এগুচ্ছে না । পাশাপাশি এ সংক্রান্ত বিষয়ে পত্রিকার নীতি নির্ধারণী ব্যক্তি বর্গের আগ্রহ ও পর্যাপ্ত জানাশোনা না থাকা, পত্রিকার পলিসি প্রভৃতি বিষয়ের সাথে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ের সম্পর্ক না থাকার কারনে গণমাধ্যম তথ্য প্রযুক্তির বিকাশ  ও জনপরিসরে এর ব্যপক ব্যবহার নিশ্চিতে ভূমিকা রাখতে সমর্থ হচ্ছে না ।

সম্পাদক ও সংবাদকর্মীদের পর্যাপ্ত জ্ঞান ও ধারনা না থাকা

সংবাদ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সম্পাদক ও সাংবাদিকরা তথ্য প্রযুক্তিঘনিষ্ঠ সংবাদকে সেভাবে গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেন না । এছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ ও তৈরি করার জন্য তাদের কোনো কর্মশালা ও শিক্ষন প্রকল্পের আওতায় আনা হয় না । একারনে বাংলাদেশের মিডিয়াতে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সাংবাদকিতার আশানুরুপ উৎকর্ষ চোখে পড়ে না ।

নিউজ কনটেন্ট ও কনটেক্সট ডেভেলপ করার প্রয়োজনীয় তাগিদের অভাব

একজন প্রযুক্তি পাতার পাঠককে প্রশ্ন করলেই জানা, সেখানে প্রতিদিন একই রুটিনে কি ছাপানো হয় । সাম্প্রতিক সময়ে সরকার কর্তৃক প্রযুক্তি সম্পর্কে নানামুখি পদক্ষেপ নেয়া, বিভিন্ন এনজিও’র তৎপরতার কারনে মাঝে মধ্যে প্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদের প্রথম, শেষ বা মাঝের কোনো পৃষ্ঠায় জায়গা হলেও নির্ধারিত প্রযুক্তি পাতায় নেই কোনো নিয়ম ভাঙার চিত্র । নতুন পন্যের বিবরন, লোমহর্ষক কম্পিউটার গেমস আর কিছু ফেসবুক টিপস । এ বৃত্ত না ভাঙতে পারলে, তথ্য প্রযুক্তিকে তার সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে নানা দৃষ্টিকোন থেকে তুলে আনতে না পারলে এ ব্যপারে পাঠকের মনস্তত্ত্ব, আন্তরিকতা, উৎসাহ ও  সচেতনতা বাড়ানো যাবে না । তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে পৌছে দেয়া যাবে না সর্বশেষ মানুষটির হাতে ।

গণমাধ্যমের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা

তথ্য প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ঠ সংবাদের প্রতি গুরুত্বারোপ

জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ গঠনে তথ্য প্রযুক্তির সাথে সাধারন মানুষের সংযুক্তি ঘটানো ছাড়া কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব নয় । সেক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের রিপোর্ট তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে জনগনের মধ্যকার সেতুর কাজ করতে    পারে । তথ্য প্রযুক্তি ক্রয়, ব্যবহার, উপযোগিতা সম্পর্কে ধারনা ও কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিতের জন্য তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদেও বিকল্প নাই । সেক্ষেত্রে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংক্রান্ত রির্পোটিং এর ক্ষেত্রে গুরুত্ব ও যত্ন দিতে হবে । তবে এ ব্যাপারে ধারনা করা যায় যে, বাংলাদেশে বিকশমান তরুনপ্রজন্ম যেই হারে প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ঠ হয়ে উঠছে , ব্যবসাসহ অন্যান্য খাতে যে ভাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বহুবিধ ব্যবহার বাড়ছে, সেক্ষেত্রে এ বিষয়ে সাংবাদিকতা করা ও এর স্পেস বৃদ্ধি করা হলে সেটা আদতে সাংবাদিকতা শিল্পের জন্যেই সুবিধাজনক হবে ।

তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক রিপোটিং কে বিট হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান

তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক রিপোটিং এখনো বিট হিসেবে স্বীকৃতি পায় নি । বিভিন্ন পত্রিকায় প্রযুক্তির জন্য আলাদা করে সাপ্তাহিক একটি পাতার কিছু অংশ বরাদ্দ করা হলেও সেটা খুবই স্বল্প জায়গা; বিষয়টির পরিসর, উপযোগিতা ও গুরুত্বের প্রেক্ষিতে । তাই সময়ের বিবেচনায়, বৈশ্বিক ও দৈশিক প্রেক্ষাপটে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদ নির্মান ও প্রচারের দিকে বিশেষ নজর দেয়া জরুরি ।

এক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তিকে খুব গুরুত্বের সাথে কভার করা যেতে পারে । আলাদা বিট করে সংবাদ কর্মী নিয়োগ দেয়া যেতে পারে, যারা তথ্য প্রযুক্তি সংক্রান্ত কেন্দ্র ও প্রান্তের সংবাদ, ফিচারগুলো পাঠকের মতো করে তৈরি করবে । উন্নয়নে কিভাবে দেশে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে, আরও কিভাবে ব্যবহার করা যায়, এর কি কি দিক হতে পারে, দেশের অবকাঠামো ও তথ্য পরিবেশের সামগ্রিক অবস্থা কেমন আছে,  কেমন হওয়া উচিৎ , সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ, সাধারান মানুষের ভাবনা, তাদের সামাজিক; সাংষ্কৃতিক জীবনের সাথে তথ্যপ্রযুক্তির জড়িয়ে থাকার বিষয়গুলো উঠে আসতে পারে ।

মফস্বল ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সাংবাদিকদের সচেতনতা ও কর্মশালা

কোন সংবাদ পত্রিকার সামগ্রিক সাংবাদিকতার মান অনেকাংশেই নির্ভর করে তার মফস্বল সাংবাদিকদের মানের উপরে । দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তি কতটুকু প্রবেশ করেছে, এর প্রভাব কি, সাধারন মানুষের জীবনে এটা সামাজিক,  অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাবসমূহ জানার ও জানানোর জন্য মেধাবী, দক্ষ মফস্বল সাংবাদিকদের বিকল্প নাই । এর পাশাপাশি রাজধানী বা শহর কেন্দ্রিক তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক রিপোর্টারদেরকে সেমিনার বা কর্মশালার মাধ্যমে এ বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি রিপোর্টিং করার ব্যপারে উৎসাহিত করতে হবে । এর পাশাপাশি এ সম্পর্কে সম্পাদকদের মনোযোগ, উৎসাহ, জ্ঞান বৃদ্ধির জন্যে পত্রিকার মালিকগোষ্ঠি সহ নীতি নির্ধারনী দায়িত্বশীল ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ভূমিকা রাখতে হবে ।

উন্নয়ন ও এডভোকেসি সাংবাদিকতার প্রতি দৃষ্টি দেয়া

বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রেক্ষিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের জন্য জনগনকে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রচলিত বানিজ্যমুখিনতার থেকে মুখ ফিরিয়ে উন্নয়ন ও এডভোকেসি সাংবাদিকতার দিকে মনোযোগী হতে পারে ।

উন্নয়ন সাংবাদিকতার বিভিন্ন ফর্মে সংবাদ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ লক্ষ লক্ষ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে পারে । সমাজে বিদ্যমান প্রযুক্তি ঘনিষ্ঠ বিভিন্ন ডিভাইড গুলো সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে পারে । এছাড়া এডভোকেসি সাংবাদিকতার মাধ্যমে সমাজের দরিদ্রপীড়িত , বঞ্চিত, ক্ষমতাকাঠামো থেকে বাদ পড়ে যাওয়া জনসাধারনকে প্রযুক্তি ব্যবহারে পথ ও উপকারিতা বাতলে দিয়ে তাদেরকে প্রযুক্তি ঘনিষ্ঠ করে তুলতে সাহায্য করতে পারে । সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পের উপর তীক্ষè পর্যবেক্ষন সাপেক্ষে তাদের ব্যাপারে পরামর্শ দেয়ার কাজটাও গণমাধ্যম করতে পারে ।

শেষের শুরু

গণমাধ্যম হয়ে উঠতে পারে একটি বিশাল প্লাটফর্ম , যার মাধ্যমে দেশের জনগনকে তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞান, ব্যক্তি ও সামষ্টিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্র ও পন্থা সমূহের বিষয়ে উৎসাহিত করা যেতে পারে ।

মিডিয়া নামক এই সেতুটির মাধ্যমেই একজন প্রান্তিক মানুষটি ইন্টারনেট সম্পর্কে জানতে পারে, যার মাধ্যমে সে প্রচলিত মিডিয়া ভোক্তা থেকে মিডিয়া নির্মাতা হয়ে উঠতে পারে । নিজের কথা গুলো বিশ্ববাসীকে জানানোর জন্য  তৈরি করতে পারে একটি নিজস্ব পাটাতন, ব্লগ । অথবা কম্পিউটার বা মোবাইলের দোকান দিয়ে হয়ে উঠতে পারেন একজন স্বনির্ভর ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ।

আর এক্ষেত্রে সংবাদকর্মী আর সম্পাদকদের ভূমিকা স্পষ্টতই বেশি । বাংলাদেশকে একটি তথ্যসমৃদ্ধ জ্ঞানভিত্তিক সমাজের দিকে পৌছে দেয়ার জন্য তাদের সচেতনতা, আন্তুরিকতা, যত্ন আর শ্রম-ই যথেষ্ঠ । প্রান্তিক, গ্রামীন দরিদ্র মানুষ, শিশু আর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, ফোনের সংযোগ বিক্রেতা থেকে কৃষক সবার জীবন ঘনিষ্ট তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদ তৈরি করতে হবে ।  মৃৎ শিল্পের কারিগর একটা ছবি তুলে কি করে তার ভিটেমাটির শেষ আলোর টুকরাটি পরবর্তি প্রজন্মের জন্য সংরক্ষন করে যেতে পারেন, সেটা করলে মৃৎ শিল্পের দীর্ঘ ইতিহাস, তার লোকজ জ্ঞান আর আমাদের সংস্কৃতির চিহ্নটুক কিভাবে রক্ষা পায় তথ্য প্রযুক্তির কল্যানে, সে ব্যপারে সবচেয়ে ভালো আর বিশ্বাসযোগ্য উপায়ে জানাতে পারেন তো একজন সংবাদকর্মীই ।

তাই দেশের উন্নয়নের জন্য, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যাক্তি আর সামষ্টিক উন্নয়নের চাকাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সামগ্রিক অর্থে সাংবাদিকতা শিল্পের এগিয়ে আসা দরকার, নিজের দায়িত্ব আর শক্তিশালী ভূমিকা পালন করার তাগিদে-ই।

তথ্য সূত্র

  • মুনির হাসান, ডিজিটাল বাংলাদেশ : তত্ত্ব তালাশ ,সামহোয়ের ইন ব্লগ, ২০১১.
  • নাসিমূল আহসান, গ্রামীন ফোন কমিউনিটি ইনফরমেশন সেন্টার : সেবার কর্পোরেটীয় হাঁকডাক এবং আমজনতার তথ্য-দারিদ্র , মিডিয়া ওয়াচ, ৩১ জানুয়ারি ২০১১,    পৃষ্ঠা নং – ৬১-৬৪ ।
  • Hoq, kazi (2006). Information literacy and its implication for Bangladesh. The Dhaka University studies, Journal of arts, vol-63, p-89-102.
  • Karim, H, Mina, Q and Samdani,     G (2011), Going Digital: Realizing the dreams of a digital Bangladesh. The University press limited, Dhaka.
  • Global Knowledge partnership (2004). The media and the information society.  Technology Park Malaysia, Malaysia.
  • S Ronald & Maria L (2003). African Media and ICT4D: Documentry Evidence: A baseline study on the state of media reporting on ICT and information society issues in Africa. Economic Commission for Africa, Africa.
  • Bagga R.K.Kenistin K. & Mathur R (2005).  The State, IT and Development. Sage publication, India.
  • Berger G (2006), From the margins to mainstream: African ICT reporting comes of age, Highway Africa, Grahamstown.
  • Economic Commission for Africa (2003), Africa Speaks: Perspectives on Africa’s Road toward the Information Society, United Nations Office in Geneva (UNOG).
  • Kundu A (2010)  , Country Paper on Information Society Statistics: Core ICT Indicators, Bangladesh Telecommunication Regulatory Commission (BTRC)
  • Torero k. and Braun J. V.(2005),   Information and Communication Technologies for the Poor : The potentials of telecommiunications, International Food policy Research Institute, USA.

লেখাটি শেয়ার করুন:

সাম্প্রতিক লেখা

জনপ্রিয় লেখা

আরও লেখা পড়ুন

আমার
সম্পর্কে

আমি নাসিমূল আহসান। পড়াশুনা করেছি যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। বর্তমানে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) সহকারী প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছি। পাশাপাশি পাটপণ্যের বহুমখিকরণ, বিপনন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ইউজুট’ এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও বিশেষায়িত কনটেন্ট মার্কেটিং এজন্সি ‘কনটেন্টো’র প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।